Friday 12 March 2010

অনেক মহিলারই কোনো না কোনো সময়ে স্তনের ব্যথা অনুভূত হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই অবস্থাকে ম্যাস্টালজিয়া বলে। হরমোন বা হরমোন নির্ভরশীল পরিবর্তন এ সমস্যার কারণ। স্তনে ব্যথার সাথে সাথে চাকা বা গুটি অনুভূত হয়। অনেকে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করেন। আসলে এটা খুব মারাত্মক কিছু নয়। তবে দুশ্চিন্তার বড় কারণ হতে পারে।
হরমোন নির্ভরশীল পরিবর্তন সাধারণত ৫৫ বছর বয়সের নিচে এবং যেসব মহিলার মাসিক এখনো চলছে তাদের হয়। কোনো কোনো মহিলার মাসিকের আগে ব্যথা ও গুটির সমস্যা বাড়ে। মাসিকের পর কমে যায়। রক্তে নানান হরমোন লেভেল স্তনের টিস্যুকে প্রভাবিত করে। কোনো কোনো সময় ব্যথা খুব তীব্র এবং সব সময় থাকে, এই ব্যথা হাতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। অনেকে ভাবেন ক্যান্সার হয়েছে। আসলে এটা ক্যান্সার নয়। জেনে রাখুন,ক্যান্সারের কারণে স্তনে ব্যথা হয় না। স্তনে গুটি কিংবা ম্যাস্টালজিয়া হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। তিনি পরীক্ষা করে কী কারণে অসুবিধা হচ্ছে তা বলতে পারবেন। অন্য কোনো কারণে গুটি কিংবা ব্যথা হয়েছে কি না তা বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোগিণীকে আশ্বস্ত করার জন্য এ ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।
মেমোগ্রামমেমোগ্রাম স্তনের এক্স-রে। ৩০ বছর বয়সের ওপরে এটা সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে। কারণ তখন স্তনের টিস্যু কম গ্লান্ডুলার থাকে এবং এক্স-রে ছবি ভালো আসে।
আল্ট্রাসাউন্ডশব্দতরঙ্গ দিয়ে এই পরীক্ষা করা হয়। ছোট একটা মাইক্রোফোন জাতীয় যন্ত্র স্তনের ওপর ধরা হয় এবং স্তনের গুটি, সিস্ট অথবা স্বাভাবিক স্তন এই পরীক্ষায় ধরা পড়ে। সব বয়সের মহিলাদের জন্য এটা একটা অত্যন্ত কার্যকর পরীক্ষা।
ফাইন নিডেল এসপিরেশন সাইটোলজিএকটি সূক্ষ্ম সুঁই দ্বারা স্তনের গুটি থেকে কিছু কোষ সরিয়ে তা অণুবীক্ষণ যন্ত্র দ্বারা পরীক্ষা করা হয়। সাধারণত এই পরীক্ষা করতে খুব একটা কষ্ট হয় না।
চিকিৎসাএকবার যখন এইচডিসি রোগ ধরা পড়ে তখন রোগিণীকে আশ্বস্ত করা যায়। রোগীর যদি উপসর্গ খুব বেশি না থাকে, কোনো ওষুধপত্রের প্রয়োজন হয় না। বেশিরভাগ মহিলার জন্য এটাই প্রযোজ্য। এইচডিসি নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়, তবে কয়েক মাস লাগতে পারে।
উপসর্গ যদি থেকে যায় অথবা রোগী যদি উপসর্গের জন্য বেশি কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন রকমের চিকিৎসা করে দেখা যেতে পারে। যেমনঃ
ইভিনিং প্রিমরোজ অয়েল ক্যাপসুলঅনেক সময় দেখা গেছে, ইভিনিং প্রিমরোজ অয়েল ক্যাপসুল খেলে স্তনের ব্যথা এবং চাকা ও শক্তভাব কমে যায়। বিশেষ করে মাসিকের আগে যখন এসব উপসর্গ বাড়ে। সব মহিলার ক্ষেত্রে এটা কাজ না-ও করতে পারে এবং এটা কাজ করতে কয়েক সপ্তাহ লাগে। ওষুধের দামও বেশি।
কেফিনচা অথবা কফি বেশি খেলে এইচডিসি বাড়তে পারে। চা বা কফি (যেগুলোতে কেফিন থাকে) খাওয়া কমিয়ে দিলে অনেক সময় এইচডিসি ভালোর দিকে যায়।
দুশ্চিন্তাদুশ্চিন্তায় মাথাব্যথা, ঘুম কম হওয়া, বিরক্ত হওয়া এবং ক্লান্ত হয়ে পড়ার সাথে সাথে ম্যাস্টালজিয়া বাড়তে পারে। এই কারণে দুশ্চিন্ত কমানো প্রয়োজন। রিলাক্সেশন করায় উপকৃত হতে পারেন।
ব্রাসঠিক ফিটিং ব্রা অনেক সময় সাহায্য করে, বিশেষ করে আপনি যদি খেলোয়াড় হন।
হরমোন থেরাপিযদি উপসর্গ খুব বেশি হয় তাহলে হরমোন থেরাপি দেয়া যেতে পারে। মনে রাখবেন, হরমোন খাবার সময় গর্ভধারণ করা যাবে না। এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। তাই রোগীর খুব কষ্ট না থাকলে দেয়া হয় না।

1 comments: